কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
এবারের ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা শত শত পর্যটক পরিবহন সংকটের শিকার হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দূরপাল্লার যানবাহনে টিকেট না পেয়ে বাধ্য হয়ে কক্সবাজারে আটকে রয়েছেন তারা। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পড়েছেন অর্থকষ্টে। গতরাতে শহরের পর্যটন এলাকায় গিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গতরাতে কক্সবাজার সাগরপাড়ে বিভিন্ন পরিবহণ কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোর সামনে বাড়ি ফিরতে আগ্রহী পর্যটকদের দীর্ঘ লাইন। শত শত পর্যটক বাক্স–পেটরা নিয়ে টিকেটের জন্য অবস্থান করছেন কাউন্টারগুলোর সামনে। তবে পরিবহন সংকটের কারণে টিকেট পাচ্ছেন না তারা। এদের মধ্যে অনেকেই প্রাইভেট মাইক্রোবাস ভাড়া করে চট্টগ্রাম শহরে রওয়ানা দিয়েছেন। তবে বেশিরভাগই টিকেট না পেয়ে রাস্তাতেই অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ বেশি ভাড়ায় মালবাহী পরিবহনে উঠেছেন। কক্সবাজারে পর্যটকদের এমন ভোগান্তি অতীতে তেমন দেখা যায়নি বলে জানান ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান।
তিনি বলেন, ঈদের ৫ম দিনে এসে পর্যটকদের আনাগোনায় কক্সবাজার হয়ে পড়ে টইটুম্বর। আগের রাতে হোটেলে কোন কক্ষ খালি যায়নি। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে পর্যটকদের মাঝে শুরু হয় বাড়ি ফেরার তাড়া। হাজার হাজার পর্যটক একসঙ্গে বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় বাধে বিপত্তি। একদিকে যানবাহন ও পর্যটকদের চাপে শহরে সৃষ্টি হয় মারাত্মক ট্রাফিক জ্যাম। তার উপর পরিবহণ সংকটে কক্সবাজারে আটকে পড়া পর্যটকরা শিকার হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের। বেশিরভাগই পড়েন অর্থকষ্টে।
এ বিষয়ে আটকে পড়া পর্যটক রাজধানী ঢাকার আবছার কবীর ও সোনিয়া কামাল বলেন– তিনদিন বেড়ানোর পর শুক্রবার ফিরব এমন বাজেট নিয়ে এসে গাড়িভাড়া ছাড়া সব টাকা খরচ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু বাধ্য হয়ে আজ (গতকাল শুক্রবার) থাকতে হচ্ছে বলে আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার–কর্জ নিলাম।
পরিবহণ সংকটের বিষয়ে এস আলম সার্ভিসের কক্সবাজারের ইনচার্জ নুরুল আলম বলেন– শুক্রবারের সকল টিকেট আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। তাই অনেকেই রাতে এসে টিকেট চাইতে গিয়ে পাননি।
সৌদিয়া, হানিফ, ইউনিক, শ্যামলী, সেন্টমার্টিন পরিবহণ, টিআর ট্রাভেল্স, গ্রিনলাইনসহ অন্যান্য পরিবহণেও একই অবস্থা বলে জানা যায়।
এবিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন– ঈদ উপ বাসগুলো ব্যস্ত রয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক জ্যামের কারণেও শিডিউল অনুযায়ী গাড়ি চলতে পারেনি। এ কারণে বাস সংকট দেখা দিয়েছে। তবে পরিবহণ সংকটের বিষয়ে বাস মালিকদের সাথে কথা বলেছি। তারা অতিরিক্ত গাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আশাকরি, রাতের মধ্যে সকল সংকট কেটে যাবে।
পাঠকের মতামত: